এই শীতে ঘুরে আসুন মাছ,পাখির অভয়াশ্রম ‘বাইক্কা বিলে’
অনলাইন
রতন মালাকার (শ্রীমঙ্গল):“দুই পাতা এক কুঁড়ির দেশ”- শ্রীমঙ্গল। ‘শ্রী’ অর্থ সুন্দর এবং ‘মঙ্গল’ অর্থ শান্তি। সুন্দর ও শান্তির শহর শ্রীমঙ্গল। চায়ের স্বর্গরাজ্য শ্রীমঙ্গলের পাশেই মাছ আর পাখির অভয়াশ্রম বাইক্কা'র বিল। ঢাকা থেকে হাইল হাওরের বাইক্কা বিলের দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার আর শ্রীমঙ্গল থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার। সিলেটের মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওরের পূর্ব পাশেই প্রায় ১০০ হেক্টর জলাভূমি নিয়ে অপরূপ সৌন্দর্যের এই বাইক্কা বিল। নদীমাতৃক বাংলাদেশের শীতের অতিথি পাখিদের মিলন মেলা ও অন্যতম অভয়াশ্রম। প্রতিদিন হাজার মাইল দূর থেকে এসে ভিড় করে অসংখ্য পরিযায়ী পাখি। সকাল-সন্ধ্যা এই অতিথি ও স্থানীয় পাখির ওড়াওড়ি আর কলকাকলিতে মুখর বিলটি হয়ে ওঠে ‘পাখির রাজ্য’। বাইক্কা বিলের মূল আকর্ষণ পরিযায়ী আর স্থানীয় পাখি। হাওরে অবস্থিত সংরতি মৎস্য অভয়াশ্রম ‘বাইক্কা বিল’। ইউএস আইডি’র র অর্থায়নে মাচ প্রকল্পের মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়েছে মৎস্য ও পাখির অভয়াশ্রম। অপরূপ সৌন্দর্য্যমন্ডিত এ বিল এখন আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে। নয়নাভিরাম জলাভূমিতে হাজারও শাপলা আর পদ্মফুল ফুঁটে। বিলের পানির উপর ঘুরে বেড়ায় ফড়িং। সকাল বিকাল চলে রঙিন ফড়িংয়ের বিরতিহীন শোভাযাত্রা। বৃষ্টিহীন উষ্ণ দিনে বিলে ফুলের পাশে আসে রঙিন প্রজাপতির দল। জীববৈচিত্র্য ও মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর বাইক্কা বিল জলজ সম্পদের অমূল্য ভান্ডার। শিক্ষা-গবেষণা ও চিএ-বিনোদনের জন্য এইবিল এখন অনন্য বিল একটি স্থান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিলের পানিতে ফোটা হাজারো পানা, শাপলা, পদ্মআর নীলপদ্ম শোভিত মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক শোভা দেখে পর্যটক ও প্রকৃতি পিপাসুরা বিমোহিত হন। ২০০৩ সালের ১লা জুলাই ভূমি মন্ত্রণালয় বাইক্কা বিলকে স্থায়ী মৎস্য অভয়াশ্রম হিসেবে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এই বিল শুধু মাছের জন্যই নয়, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর জন্য একটি চমৎকার নিরাপদ আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া বাইক্কা বিলে দেখা মিলে পদ্ম,শাপলা, মাখনা স্বাদের জলজ ফুল ও ফল। সুস্বাদু সংরতি মৎস্য অভয়াশ্রমে গত কয়েক বছর ধরে সাইবেরিয়ার সাত সমুদ্র তেরো নদী পার হয়ে অতিথি পাখিরা বাইক্কা বিলে আসছে। এ বিলে এখন মৎস্য সম্পদ যেমন বাড়ছে, তেমনি হাজার হাজার অতিথি পাখির আগমনে এলাকাটি মুখর হয়ে উঠেছ। বিলের দাপুটে পাখিরা হল শঙ্খচিল, ভুবন চিল, পালাসী কুড়া ঈগল, গুটি ঈগল ইত্যাদি। এ সময়ে আরও দেখা মিলবে বিলের অতিথি পাখি সরালি, মরচেরং ভুঁতি হাঁস, গিরিয়া হাঁস আর ল্যাঞ্জা হাঁসের ভেসে চলা। বিলের মধ্যে অপেক্ষাকৃত দূরত্বে দেখা মিলবে মেটেমাথা টিটি, কালাপাখা ঠেঙ্গী গেওয়ালা বাটান ইত্যাদি। শীত চলে গেলে পাখিরাও কমে যায় বিল থেকে।
Leave a Comment