গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ৪৬.৫ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম: ইডব্লিউজি
অনলাইন ডেস্ক
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ৪৬.৫ কেন্দ্রে অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। পর্যবেক্ষক সংস্থা ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের (ইডব্লিউজি) পর্যবেক্ষণে এই চিত্র উঠে এসেছে।
২৮ জুন, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ইডব্লিউজির সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সংস্থাটির সভাপতি ড. মো. আব্দুল আলীম গত ২৮ জুন অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিষয়ে প্রাথমিক বিবৃতি তুলে ধরেন।
আব্দুল আলীম বলেন, ‘ইডব্লিউজির পর্যবেক্ষকরা যেসব ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছে, সেগুলোর ৪৬. ৫ শতাংশ কেন্দ্রে ১৫৯টি নির্বাচনী অনিয়মের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছে। এসব অনিয়মের ঘটনা বেশিরভাগই দুপুরের পরে ঘটেছে।’
গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ৫৭টি ওয়ার্ড ও ৪২৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্য থেকে দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সব ওয়ার্ডের ১২৯টি (৩০.৪ শতাংশ) ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করে ইডব্লিউজি।
সংস্থাটির মতে, গাজীপুর নির্বাচনে ১০টায় ১৭.৭, দুপুর ১টায় ৪০.৮, বিকেল ৩টায় ৫৫.৩ ও বিকেল ৪টায় ৬১.৯ শতাংশ ভোট পড়ে।
পর্যবেক্ষণে বলা হয়, গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ১৫৯টি অনিয়মের মধ্যে ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে নির্বাচনী প্রচার করার ঘটনা ২৪টি, ভোটকেন্দ্রে অননুমোদিত ব্যক্তির উপস্থিতির ঘটনা ৩০টি, ভোটকেন্দ্রের ভেতর ৮টি এবং বাইরে ৯ সহিংসতার ঘটনা, অবৈধভাবে ব্যালটে সিল মারার ২১টি ঘটনা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ প্রার্থীর পক্ষ নিয়েছেন এমন পাঁচটি, ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি এমন ঘটনা ছয়টি, ভোটারকে ভোটকক্ষে প্রবেশের পর আঙ্গুলে কালির ছাপ দিয়ে বলা হয়েছে আপনার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে এমন ঘটনা তিনটি, পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়ার তিনটি ঘটনা, পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা ছয়টি এবং অন্যান্য অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে ১৬টি।
ইডব্লিউজির পর্যবেক্ষণ মতে, সংস্থাটির পর্যবেক্ষকরা ভোটগ্রহণ শুরুর সময়ে ৯৬.৯ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট এবং ৮১.৪ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে বিএনপি মেয়র প্রার্থীর এজেন্টদের দেখতে পান।
পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ৯৮ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সাজসরঞ্জাম প্রস্তুত ছিল এবং ৮১.৪ শতাংশ ভোটকেন্দ্রের কক্ষগুলো নিয়ম অনুসরণ করে প্রস্তুত করা হয়।
এক সাংবাদিক জানান, তারা নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এর চেয়ে বেশি অনিয়ম দেখেছেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আব্দুল আলীম জানান, তারা নিজেদের পর্যবেক্ষক দিয়ে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের যে চিত্র পেয়েছেন, সেটাই তারা এখানে তুলে ধরেছেন।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বেসরকারি হিসাবে, আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম চার লাখ ১০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন । অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার পেয়েছেন এক লাখ ৯৭ হাজার ৬১১ ভোট।
বিএনপির অভিযোগ, খুলনা সিটি নির্বাচনের চেয়ে গাজীপুরের নির্বাচনে কারচুপি বেশি হয়েছে। দলটি পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
Leave a Comment