চীনে উচ্চ শিক্ষা
সোহাগ
প্রথমত করণীয়
চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অসংখ্য প্রোগ্রাম অফার করে থাকে। তাই একজন আগ্রহী শিক্ষার্থীর প্রথম কাজ হবে ইন্টারনেটে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের প্রোগ্রামগুলো সম্পর্কে জেনে নিয়ে তার পছন্দের প্রোগ্রামগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরী করা। অতঃপর তাকে চীনের সবচেয়ে ভাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর খোঁজ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, যত বেশী সংখ্যক ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা যায় ততোই ভালো, কারণ এতে একজন শিক্ষার্থীর সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
আবেদন পত্র
আবেদনপত্রের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে তার পছন্দকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফরম ডাউনলোড করে পূরণ করতে হবে। শিক্ষার্থী ইচ্ছা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানায় ই-মেইল করে আবেদনপত্র সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র তার ঠিকানায় পাঠানোর অনুরোধ করতে পারে। আবেদন ফরম অত্যন্ত যত্নের সাথে পূরণ করতে হবে এবং ঘষামাজা করা চলবে না। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ই আবেদনপত্র Process করার জন্য একটি নির্ধারিত ফি নিয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে এই ফি ৩৮০ ইউয়ান থেকে ৭৭০ ইউয়ান পর্যন্ত হয়ে থাকে। আবেদন ফি অগ্রিম পরিশোধ করে তার রশিদটি আবেদন ফরমের ডকুমেন্টের সাথে সংযুক্ত করে দিতে হয়।
যেসব ডকুমেন্ট প্রয়োজন
চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আবেদনপত্রের সাথে নির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্র চেয়ে থাকে যেন তারা এসব ডকুমেন্ট থেকে আপনার যোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে। আবেদনপত্রের সাথে যেসব কাগজপত্র পাঠাতে হয় সেগুলোর নিচে উল্লেখ করা হলো:
- HSK সনদ (আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য ন্যূনতম ব্যান্ড স্কোর ৪-৬, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য ৫-৮) যা চাইনীজ ভাষায় আপনার দক্ষতা প্রমাণ করবে।
- যেসব আবেদনকারী ইংরেজী ভাষাভাষী নন, তাদের TOEFL বা IELTS এর প্রয়োজনীয় স্কোর থাকতে হবে এবং এর সনদ সংযুক্ত করতে হবে।
- এম বি এ প্রোগ্রামে ভর্তি হতে চাইলে GRE বা GMAT এর স্কোর শীট সংযুক্ত করতে হবে।
- বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন অধ্যাপকের একাডেমিক সুপারিশপত্র (Recommendation Letter) প্রয়োজন যেখানে ফোন নম্বর, ই-মেইল অ্যাড্রেস ইত্যাদি সবকিছু উল্লেখ করা থাকবে।
- প্রার্থীর একটি পূর্নাঙ্গ বায়োডাটা সংযুক্ত করতে হবে।
- ব্যাংক সলভেন্সী সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি।
- ৩ কপি সাম্প্রতিক সময়ে তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি সংযুক্ত করতে হবে।
- পাসপোর্টের ফটোকপি
- আবেদন ফি জমা দেয়ার রশিদ।
কোন কোন পর্যায়ে চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া যায়?
আন্ডারগ্র্যাজুয়েট
চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৪ বছরের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম চালু আছে। এই প্রোগ্রাম সাধারণ শিক্ষা বা কারিগরী শিক্ষা হতে পারে। এই ৪ বৎসরের অধ্যয়ন শেষে আপনি ব্যাচেলর ডিগ্রী পাবেন কিনা তা নির্ভর করবে আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে ভর্তি হয়েছেন এবং কোন কোর্সে ভর্তি হয়েছেন তার উপর। মনের রাখা প্রয়োজন ভালো মানের চীনা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তি হওয়া অত্যন্ত কঠিন ও প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ।
পোস্ট গ্র্যাজুয়েট
চীনের বেশ কিছু কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাচেলর পর্যায়ে সফল শিক্ষার্থীদের মাস্টার্স ও পি এইচডি ডিগ্রী অফার করে থাকে। মাস্টার্সের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে ৩ বৎসর অধ্যয়ন করতে হয় এবং পিএইচডি’র জন্য মাস্টার্সের পর আরো ৩ বছর অধ্যয়ন করতে হয়।
জনপ্রিয় বিষয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়
চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীর কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় শীর্ষস্থানীয় ১০ টি বিষয় এবং এসব বিষয় যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে ভালো পড়ানো হয় সেগুলোর নাম নিচে উল্লেখ করা হলো:
বিষয়ের নাম |
বিশ্ববিদ্যায়লের নাম |
ক্লিনিক্যাল মেডিসিন |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
ইন্টারন্যাশনাল ইকোনোমিক্স এন্ড ট্রেড |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
বিজনেস অ্যাডমিনিষ্ট্রেশন |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
চাইনিজ ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড লিটারেচার |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
স্থাপত্য বিদ্যা |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
কম্যুনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
চাইনিজ ট্রেইনিং |
|
|
|
|
|
|
|
|
চীনের ষ্টুডেন্ট ভিসা
বিদেশে পড়াশুনা করার জন্য ষ্টুডেন্ট ভিসা প্রাপ্তি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। চীনের ক্ষেত্রেও এটা ব্যতিক্রম নয়। বিদেশীদেরকে চীন সরকার যে বিভিন্ন ধরনের ভিসা প্রদান করে থাকে তার মধ্যে এক্স (X) ক্যাটাগরীর ভিসা বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা হিসাবে দেয়া হয়। যে কোন ছাত্র-ছাত্রী যারা ৬ মাস বা তদুর্ধ্ব সময়ের জন্য চীনে পড়াশোনা করতে যাবেন তাদের জন্য তাদের নিকটস্থ চায়না অ্যাম্বাসী থেকে (X) ভিসা সংগ্রহ করতে হবে।
ভিসার আবেদন
আপনি চীনে পৌছাবার আনুমানিক তারিখের ১ মাস পূর্বে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। কাউন্সেলর অফিস থেকে আপনাকে ভিসার আবেদন ফরমের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে বলা হবে যেসব কাগজপত্র আপনার যোগ্যতা প্রমান করবে। আবেদন ফরম অবশ্যই যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। ঘষামাজা করা যাবে না। প্রার্থীর বয়স ১৮ বছরের কম হলে তার পিতা/মাতা তার পক্ষে স্বাক্ষর করতে পারেন। আবেদন ফর্ম অবশ্যই সশরীরে প্রার্থীর নিজ দেশের চীনা অ্যাম্বেসী অথবা নিকটস্থ কনস্যুলেট জেনারেলের অফিসে জমা দিতে হবে। কোনভাবেই ডাকযোগে আবেদনপত্র জমা নেয়া হবে না। প্রার্থী কোন কারণে অসমর্থ হলে তার পক্ষে অন্য কেউ সশরীরে গিয়ে জমা দিতে হবে।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
- মূল পাসপোর্ট (ন্যূনতম ৬ মাস মেয়াদ থাকতে হবে)
- পূরণকৃত ভিসা অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম
- ১ কপি সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের ফটো।
- শারিরীক যোগ্যতার প্রমানপত্র
- চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত “Visa Application Form For International Students” (JW201 or JW 202) এর একটি মূলকপি এবং একটি ফটোকপি।
- যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন সেখান থেকে ইস্যুকৃত “Letter of Admission” এর একটি মূলকপি ও একটি ফটোকপি।
- আপনি যদি ইতোপূর্বে কখনও চীনের ভিসা পেয়ে থাকেন, তবে সর্বেশেষ ভিসার কপি।
- শিক্ষার্থীর সর্বেশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে একটি কভার লেটার।
- পাসপোর্টের “Personal Data Page” এর ফটোকপি।
এভাবে একজন শিক্ষার্থী উপরোক্ত প্রক্রিয়াগুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন করে ভালো মানের কোন চীনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য নির্বাচিত হতে পারেন।
আরো তথ্যের জন্য
এ বিষয়ে আরো তথ্য পেতে আগ্রহীগণ নিচের ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন : service@at0086.com
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য বাংলাদেশের কনসালটেন্সী ফার্মগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
এ ধরনের কয়েকটি মান সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা নিম্নে দেয়া হলো:
প্রতিষ্ঠানের নাম |
ঠিকানা |
ফোন নং |
Unity Global Network |
Suit # 401, 3rd Floor, Anannya Shopping Complex, Baridhara DOHS, Dhaka-1206, Bangladesh. |
+8801943680910 +8801976777055 |
|
|
|
|
|
|
Leave a Comment