Breaking News

প্রচ্ছদ > বিজয়ের মাস

জাতির উদ্দেশে জেনারেল ওসমানীর বেতারে ভাষণ

মাজেদুল
জাতির উদ্দেশে জেনারেল ওসমানীর বেতারে ভাষণ

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে নিজস্ব ভূখণ্ড, সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা পাওয়ার গৌরবোজ্জ্বল বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এ উত্তপ্ত অবস্থাতে মুক্তিযোদ্ধারা যাতে মনোবল হারিয়ে না ফেলেন সেজন্য মুক্তিবাহিনীর সেনাপতি জেনারেল ওসমানী জাতির উদ্দেশে বেতারে ভাষণ দেন।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মূল লড়াইটা ছিল বাংলাদেশের পক্ষে সোভিয়েত ইউনিয়ন আর পাকিস্তানের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র দুই পরাশক্তির মাঝে। ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব উত্থাপন করার প্রেক্ষিতে ৫ ডিসেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়নও একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে। প্রস্তাবটি ছিল, ‘পূর্ব পাকিস্তানে এমন এক রাজনৈতিক নিষ্পত্তি প্রয়োজন যার ফলে বর্তমান সংঘাতের অবসান ঘটবে’।

সোভিয়েত ইউনিয়নের এই প্রস্তাবে পোল্যান্ড সমর্থন জানালেও চীন ভেটো প্রদান করে। জাতিসংঘে চীনের প্রতিনিধি বলেন, কোনো শর্ত ছাড়াই পাকিস্তান থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে। এ ছাড়া চীনের প্রধানমন্ত্রী চউ এন লাই ভারতীয় হামলার মুখে পাকিস্তানকে সর্বাত্নক সহায়তা দেয়ারও কথা বলেন। কিন্তু অন্যরা সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রস্তাবে ভোটদানে নিজেদের বিরত রাখে।আর বাংলাদেশ সম্পর্কে পরিষদে তৃতীয় প্রস্তাবটি পেশ করে বেলজিয়াম, ইতালি ও জাপান। 

মুক্তিযুদ্ধের এই দিনে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে সকল বিদেশি জাহাজগুলোকে বন্দরে ছেড়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন নৌবাহিনীর যৌথ কমান্ডার। এমনকি এই সময় নিরাপত্তা চাইলে বিদেশি জাহাজগুলোকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে অপারগতাও প্রকাশ করেন তারা। এই দিনে লেফটন্যান্ট আরেফিনের নেতৃত্বে চালনা নৌবন্দরে এক তীব্র আক্রমণ সংঘটিত হয়। মুক্তিবাহিনীর এই আক্রমণের ফলে বন্দর ত্যাগ করতে বাধ্য হয় পাক বাহিনীর সব সৈন্য। 

একই দিনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সিলেট সেক্টরে বোমাবর্ষণ করে শত্রুর পাঁচটি বাঙ্কার উড়িয়ে দেয়। জামালপুর বিমান হামলায় হানাদার বাহিনীর কয়েকশ’ সৈন্য নিহত হয়, বিধ্বস্ত হয় বহু সামরিক যানবাহন। বখশীগঞ্জে যৌথ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয়। মুক্ত হয় পীরগঞ্জ, হাতিবান্ধা, পচাগড়, বোদা, ফুলবাড়ী, বীরগঞ্জ ও নবাবগঞ্জ।

মুক্তিযুদ্ধকালীন ৫ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনী আখাউড়ার দক্ষিণ ও পশ্চিম দিক অবরোধ করে ফেলে। এর ফলে পাক হানাদার বাহিনী মিত্রবাহিনীর সাথে যুদ্ধে টিকতে না পেরে আত্মসমর্পণ করে। আখাউড়া সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয়। আর জীবননগর, দর্শনা ও কোট চাঁদপুরে পাক হানাদার বাহিনী মিত্রবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে টিকতে না পেরে আত্মসমর্পণ করে।

Leave a Comment

এই বিভাগের আরও খবর

  • photodune-2043745-college-student-s

    বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা প্রণয়ন

    ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানের পরাজয় যখন নিশ্চিতের দিকে তখন ১২ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা তৈরি করা হয়। বিশিষ্ট সাংবাদিক নিজামউদ্দিন আহমদ, আ ন ম গোলাম মোস্তফাকে তাদের বাসভবন থেকে ধরে নিয়ে যায় আল-বদর বাহিনী। ...

  • photodune-2043745-college-student-s

    মুক্তিযুদ্ধের গল্প নিয়ে ভিডিও তথ্যভাণ্ডার নির্মাণের উদ্যোগ

    বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মুখ থেকে মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি বর্ণনার মাধ্যমে ডিজিটাল ভিডিও সংগ্রহশালা তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশব্যাপি মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন কাহিনী বা গল্প ভিডিও’র মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া এ পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য। ...

  • photodune-2043745-college-student-s

    স্বাধীন বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতি

    আজ ৬ ডিসেম্বর। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর কাছ থেকে বাঙালিদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও স্বতন্ত্র সত্তা ফিরে পাওয়ার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ভারত সরকার। ...

  • photodune-2043745-college-student-s

    জাতির উদ্দেশে জেনারেল ওসমানীর বেতারে ভাষণ

    বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে নিজস্ব ভূখণ্ড, সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা পাওয়ার গৌরবোজ্জ্বল বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠে। ...

Copyright 2016 All rights reserved easynews24.com. Published by Azmari Huq on behalf of Unity Media House. Website Developed By Star Design BD