ফুটবলে জার্মানির আত্মহত্যা!
অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বকাপ ফুটবলে আত্মহত্যা করেছে জার্মানি। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন এই দলটি যেভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরেছে তাকে আত্মহত্যা ছাড়া আর কিই বা বলা যায়! বিশ্বকাপের আসরে গ্রুপ পর্যায় থেকে দেশটি বাতিল হয় নি কতদিন তা হিসেবে করতে গেলে পরিসংখ্যানের বই নিয়ে বসতে হবে। তবে যতদূর জানা যায়, তাতে ১৯৩৮ সালে প্রথম এমন ঘটনা ঘটেছিল। তারপর চার বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে প্রথম রাউন্ডে এভাবে বিশ্বকাপের আসর ছেড়ে বের হতে হয় নি। রেফারি শেষ বাঁশি বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে যেন জার্মানির দুর্গ তাসের ঘরের মতো ধসে পড়ে। কেউ মাথা তুলে তাকাতে পারছেন না।
গ্যালারিতে পিনপতন নীরবতা ভক্তদের মধ্যে। অঝোরে কাঁদছেন অসংখ্য ভক্ত। তাদের ওপর ক্যামেরা যখন ফোকাস করা হচ্ছিল তখন দেখা যাচ্ছিল গন্ড বেয়ে বহমান ¯্রােতা নদীর মতো ঝরছে অশ্রু। তখন জার্মানিতে কি হয়েছিল সে খবর এখনও মিডিয়ায় আসে নি। জার্মানির ভিতরে নাগরিকরা নিশ্চয় এমন পরিণতি মেনে নিতে পারেন নি। ফলে বহু বছর পর তাদের কাছে বুধবার দিবাগত রাতটা ছিল বীভিষিকাময়। হয়তো ঘুমের ঘোরে আৎকে উঠেছেন তারা। গতিময় আর কৌশলী খেলায় যে জার্মানি বিশ্বজুড়ে নিজের নাম পাকাপোক্ত করেছে, ব্রাজিলের পর সর্বোচ্চ বেশি বার বিশ্বকাপ হাতে নেয়ার গৌরব অর্জন করেছে, তাদের সেই নৈপুণ্যের কারণে বাংলাদেশ সহ সারাবিশ্বে তাদের কোটি কোটি ভক্ত। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে এই অগণিত ভক্তের হৃদয়ও ভেঙে গেছে। কেউ প্রকাশ্যে কেঁদেছেন। কেউ আড়ালে আবডালে গিয়ে কেঁদেছেন। তাদের শরীর যেন ক্ষোভে, কষ্টে পুড়ে যাচ্ছিল। এমন ঘটনাকে আত্মহত্যা ছাড়া আর কি বলা যায়! এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্লেষণ। সবচেয়ে অভিজ্ঞ, দক্ষ খেলোয়াড় থাকা সত্ত্বেও কেন জার্মানি এভাবে নেতিয়ে পড়লো। বিশেষ করে শেষ মুহূর্তে যে গোলটি হয় তার জন্য দায়ী কে! জার্মানির গোলকিপার ম্যানুয়েল ন্যুয়ার কেন নিজের স্থান ছেড়ে বিরোধী পক্ষের ডি-বক্সের সামনে! আক্রমণভাবে তো ১০ জন খেলোয়ার ছিলেনই। তাদের দায়িত্ব বিপক্ষের জালে বল পাঠানো। তাদের চেয়ে তিনি বেশি কৌশলী হয়ে গেলেন! তাই নিজের গোলপোস্ট ফাঁকা রেখে তিনি চলে গেলেন ডি-বক্সের সামনে। আর তারপর যা হবার তা তো সবাই দেখেছেনই। এটাকে কি আত্মহত্যা বলা যায় না! ২০১৪ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন হয় জার্মানি। তখন তাদের দলের নেতৃত্বে ছিলেন ফিলিপ লাম, মিরোস্লাভ ক্লোসে, বাস্তিয়ান শয়েনস্টেইগার। তখন তারা তাদের কৌশল প্রদর্শন, আধিপত্য বিস্তারে সক্ষম ছিলেন। কিন্তু তাদের মধ্যে যে শক্তিমত্তা ছিল তা এবারকার টিমে ছিল না। ক্লোসেকে রাখা হয়েছিল এমন একটি পজিশনে যেখান থেকে তিনি গোলে বল পাঠিয়ে দিতে পারেন। শয়েনস্টেইগার ছিলেন ডিফেন্সে। তাকে অতিক্রম করে ডিবক্সে ঢোকা ছিল দুঃসাধ্য কাজ। আর নেতৃত্বে, দল পরিচালনা, আক্রমণভাগের নেতৃত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন লাম। সেই জার্মানি একই ধারায় খেলেছে রাশিয়ায়। কিন্তু তাদের ব্যক্তিগত পারফরমেন্সে ঘাটতি ছিল। যারা অবসরে গিয়েছেন তারা ছিলেন বিধ্বস্ত।
Leave a Comment