বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা প্রণয়ন
ডেস্ক
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানের পরাজয় যখন নিশ্চিতের দিকে তখন ১২ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা তৈরি করা হয়। বিশিষ্ট সাংবাদিক নিজামউদ্দিন আহমদ, আ ন ম গোলাম মোস্তফাকে তাদের বাসভবন থেকে ধরে নিয়ে যায় আল-বদর বাহিনী।
ঢাকা সেনানিবাসে প্রাদেশিক সরকারের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর সভাপতিত্বে আলবদর, আলশামস কেন্দ্রীয় অধিনায়কদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা প্রণয়ন করে বুদ্ধিজীবীসহ বিশেষ বিশেষ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের নামের তালিকা তাদের হাতে তুলে দেন ফরমান আলী।
এই দিনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারত ও পাকিস্তানের প্রতিনিধিদের বক্তব্য দেওয়ার পর উক্ত অধিবেশন মুলতবি হয়ে যায়। সেই সঙ্গে ব্যর্থ হয় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা। মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্দেশে ৯ ডিসেম্বর রওনা দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ৭ম নৌবহর বঙ্গোপসাগর থেকে মাত্র ২৪ ঘণ্টার দূরত্বে গভীর সমুদ্রে এসে অবস্থান নেয়।
এদিকে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ব্যাপকভাবে সমর্থন দেয়ার জন্য ভারত সরকার ও ভারতীয় জনগণকে ধন্যবাদ জানান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘মুক্তিসংগ্রামে জয়লাভের আর দেরি নেই’।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘আমার শেষ সংগ্রাম বাংলাদেশকে স্বাধীন করা, সমাজতন্ত্রবাদ প্রতিষ্ঠা এবং ভারতের সঙ্গে কনফেডারেশন। এ তিন কাজের সাধন ইনশাআল্লাহ আমার জীবিতকালেই দেখবার প্রবল ইচ্ছা অন্তরে পোষণ করি’।
১২ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলে যৌথবাহিনীর আক্রমণের শিকার পাক হানাদার বাহিনী অস্ত্র সংবরণ করে। ঢাকায় সামরিক অবস্থানের ওপর চলে অব্যাহত বিমান হামলা। এদিন কোনো সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়নি। ঢাকায় কারফিউ অব্যাহত থাকে এবং ঘরে ঘরে চলে তল্লাশি। শত্রুমুক্ত হয় নরসিংদী, নীলফামারী, গাইবান্ধা, সরিষাবাড়ী, ভেড়ামারা ও শ্রীপুর।
Leave a Comment