বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মুখ থেকে মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি বর্ণনার মাধ্যমে ডিজিটাল ভিডিও সংগ্রহশালা তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশব্যাপি মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন কাহিনী বা গল্প ভিডিও’র মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া এ পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য। মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণামূলক গল্পগুলো যেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের হৃদয়ে থাকে, সে উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এ কাজটি করছে গ্রামীণফোন।

মঙ্গলবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গ্রামীণফোন তাদের এই উদ্যোগের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তরুণদের বেশ কয়েকটি দল সারাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে গিয়ে তাদের মুখ থেকে মুক্তিযুদ্ধের গল্পগুলো ভিডিও করার কাজ শুরু করেছে। দেশের ৬৪টি জেলায় মোট ২০টি দল একযোগে কাজ করবে। পরে সবগুলো ভিডিও একত্রিত করে অনলাইনে ভিডিও সংগ্রহশালা তৈরি করবে গ্রামীণফোন, যেখানে ফুটিয়ে তোলা হবে কীভাবে মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছেন।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরাও এ ধরনের একটি উদ্যােগ নেওয়ার পরিকল্পনা করছিলাম। গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ ভিডিও লাইব্রেরি তৈরির কাজটি শুরু করায়। আমি আশা করবে যে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তুলে ধরতে গ্রামীণফোনের মতো এগিয়ে আসবে’।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিটার বি. ফারবার্গ বলেন, ‘দীর্ঘ সময় পার হয়ে যাওয়ায় আমরা অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিরতরে হারিয়ে ফেলেছি। তাই এখনই সময় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মুক্তিযুদ্ধের একেবারে সত্য গল্পগুলো সংরক্ষণ করার। উদ্যোগটির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের গল্পগুলো চিরকাল থেকে যাবে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে প্রেরণার সর্বোৎকৃষ্ট উৎস হয়ে থাকবে যারা পরবর্তীতে দেশকে নেতৃত্ব দেবে। আমরা জাতিগতভাবে স্বাধীন বাংলাদেশ এর স্থপতিদের কাছে চির কৃতজ্ঞ, আর তাদের গল্পগুলো অজানা থেকে গেলে যে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, এমনকি বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।’

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ হান্নান, প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, সাধারণ মানুষ তাদের পরিচিত মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য ওয়েবসাইটে (www.ekattorerkotha.com) প্রদান করতে পারবেন।

‘একাত্তরের কথা’ শীর্ষক এই উদ্যোগটি আনুষ্ঠানিকভাবে ৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে চলবে পরবর্তী তিন মাস। আগামী বছরের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের দিন গ্রামীণফোন আনুষ্ঠানিকভাবে ভিডিও সংগ্রহশালাটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হাতে তুলে দেবে। ভিডিওটি সকলের জন্য অনলাইনে উম্মুক্ত থাকবে।