Breaking News

প্রচ্ছদ > শোকাবহ আগষ্ট

১৫ আগস্টে প্রথম শহীদ হন শেখ কামাল

অনলাইন
১৫ আগস্টে প্রথম শহীদ হন শেখ কামাল

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সংঘটিত নারকীয় হত্যাযজ্ঞের প্রধান লক্ষ্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলেও প্রথম শহীদ হন বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামাল। বজলুল হুদা তার স্টেনগান দিয়ে তাকে হত্যা করেন।
আদালতে দেয়া বঙ্গবন্ধুর বাড়ির অন্যতম পাহারাদার হাবিলদার কুদ্দুস সিকদারের সাক্ষ্য থেকে জানা যায়, বাড়িতে প্রথম ঢোকেন মেজর বজলুল হুদা ও ক্যাপ্টেন নূর চৌধুরী। সঙ্গে আরো কয়েকজন।
বাড়িতে ঢুকেই তারা শেখ কামালকে দেখতে পান। সঙ্গে বজলুল হুদা স্টেনগান দিয়ে তাকে গুলি করেন। শেখ কামাল বারান্দা থেকে ছিটকে গিয়ে অভ্যর্থনা কক্ষের মধ্যে পড়ে যান। সেখানে তাকে ফের গুলি করে হত্যা করা হয়।
বঙ্গবন্ধু ভবনের আবাসিক ব্যক্তিগত সহকারি ও হত্যা মামলার বাদী মুহিতুল ইসলামের প্রত্যক্ষ সাক্ষ্যের মধ্যেও এ কথা রয়েছে।
বাড়িতে আক্রমণের পর বঙ্গবন্ধু তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল শফিউল্লাহকে টেলিফোনে যা বলেছিলেন তাতেও এর সত্যতা পাওয়া যায়।
১৯৮৭ এবং ১৯৯৩ সালে দুটি সাক্ষাৎকারে শফিউল্লাহ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর বাড়ি আক্রমণের পর তিনি জলদি ফোর্স পাঠানোর জন্য তাগিদ দিয়ে তাকে ফোন করেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘শফিউল্লাহ তোমার ফোর্স আমার বাড়ি অ্যাটাক করেছে। কামালকে বোধ হয় মাইরা ফেলছে। তুমি জলদি ফোর্স পাঠাও।
প্রবাসী লেখক ও গবেষক গোলাম মুরশিদ ‘মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর’ বইয়ে এ বিষয়ে বিশদ বিবরণ দিয়েছেন। শেখ কামাল নিহত হবার পর মহিউদ্দিন ও তার সঙ্গীরা বাড়ির ভেতরে ঢুকে মুজিবকে খুঁজতে থাকেন। শেষে তাঁর দেখা পায় সামনের বারান্দায়। সাহসের প্রতিমূর্তি মুজিব দাঁড়িয়ে আছেন প্রশান্তভাবে- হাতে পাইপ।
তাঁকে দেখে খুনি মহিউদ্দিন পর্যন্ত ভড়কে যায়। বঙ্গবন্ধুকে গুলি করতে পারেননি। কেবল বলে- ‘স্যার, আপনে আসেন’। শেষে যখন তাঁকে ধরে সিঁড়ি দিয়ে নামাতে আরম্ভ করে তখন বঙ্গবন্ধু চিৎকার করে বলেন, ‘তোরা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস?’ এসময় মহিউদ্দিনকে একপাশে সরতে বলে হুদা আর নূর স্টেনগান দিয়ে গুলি করেন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুকে।
ভোর পাঁচটা ৪০ মিনিটে মুখ থুবড়ে বঙ্গবন্ধু লুটিয়ে পড়েন সিঁড়িতে। তখনো তাঁর ডান হাতে ধরা ছিল পাইপ। কয়েকটা গুলি তাঁর বুকের ডান দিকে এবং পেটে লেগেছিল। ফলে যখন সূর্য ওঠার কথা, সেই সূর্য ওঠার সময় বঙ্গের গৌরব-রবি গেলো অস্তাচলে।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরও ঘাতকদের মিশন শেষ হয়নি। মহিউদ্দিন, হুদা ও নূর বাড়ির বাইরে চলে যাবার পর ল্যান্সার আর আর্টিলারির সেনাদের নিয়ে আসে আজিজ পাশা আর মুসলেউদ্দীন।
পাশা তার সঙ্গীদের নিয়ে দোতলায় যান। আগে থেকেই সেখানে ছিল সুবেদার ওয়াহাব জোয়ারদার। তারা গিয়ে রাসেল, শেখ নাসের ও বাড়ির এক ভৃত্যকে নিচে নিয়ে যান। শোবার ঘরে গিয়ে বেগম মুজিব, শেখ জামাল এবং কামাল ও জামালের সদ্য বিবাহিত স্ত্রীদের স্টেনগানের গুলি দিয়ে হত্যা করেন পাশা আর মুসলেম উদ্দীন।
নিচে গিয়ে ঘাতকরা রাসেলকে প্রথমে বসিয়ে রেখেছিল গেটের পাশে পাহারাদারের চৌকিতে। রাসেল তখন মায়ের কাছে যাবে বলে কাঁদছিল। পাশা একজন হাবিলদারকে তখন হুকুম দেন রাসেলকে তার মায়ের কাছে নিয়ে যেতে। সেই হাবিলদার সত্যি সত্যিই তাকে মায়ের কাছে পাঠিয়েছিল, দোতলায় নিয়ে গিয়ে- একেবারে কাছ থেকে গুলি করে।
শুক্রবার বাসসে প্রকাশিত খবরে এসব কথা বলা হয়েছে।

Leave a Comment

এই বিভাগের আরও খবর

  • photodune-2043745-college-student-s

    শোকের মাস আগস্টের কর্মসূচি ঘোষণা

    শোকের মাস আগস্টকে ঘিরে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শনিবার তার সরকারি বাসভবনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।...

  • photodune-2043745-college-student-s

    ১৫ আগস্টে প্রথম শহীদ হন শেখ কামাল

    ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সংঘটিত নারকীয় হত্যাযজ্ঞের প্রধান লক্ষ্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলেও প্রথম শহীদ হন বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামাল। বজলুল হুদা তার স্টেনগান দিয়ে তাকে হত্যা করেন। ...

Copyright 2016 All rights reserved easynews24.com. Published by Azmari Huq on behalf of Unity Media House. Website Developed By Star Design BD